বাংলা একাডেমীর জীবনী গ্রন্থমালা প্রকল্পের আওতায় 'রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ' বইটির প্রকাশ। জীবনী গ্রন্থের জন্য প্রয়োজনীয় সব উপাদান এই বইতে রয়েছে। কবির জীবন, শৈশব, কৈশোর, তারুণ্য, যৌবন; প্রকাশিত কাব্যগ্রন্থের তালিকা ও সংক্ষিপ্ত বিবরণ; তার সম্পর্কে অন্যদের মন্তব্য; বেশ কিছু উল্লেখযোগ্য রচনার নিদর্শন ইত্যাদি দিয়ে সাজানো এই বই বেশ তথ্যবহুল। সাহিত্য ও ইতিহাস নিয়ে গবেষণায় আগ্রহীদের নিকট প্রয়োজনীয় উপাদান এই বইয়ের গুরুত্ব অনেক বাড়িয়ে দিয়েছে। ভাষা আন্দোলনের অমর শহীদদের স্মৃতির উদ্দেশ্যে বাংলা একাডেমীর এই সশ্রদ্ধ নিবেদন সত্যি প্রশংসাজনক।
রুদ্র মুহম্মদ শহিদুল্লাহ ছিলেন সত্তর দশকের অন্যতম শ্রেষ্ঠ কবি। কাব্যচর্চার পাশাপাশি সঙ্গীত, নাটক, ছোটগল্প রচনাতেও তিনি সমান উৎসাহী ছিলেন। তিনি চেয়েছিলেন বৈষম্যহীন সমাজব্যবস্থা গড়ে উঠুক। আর তাই রুদ্রের সমস্ত শিল্প সাধনা ছিল দেশ, মানুষ ও মনুষ্যত্বের প্রতি অঙ্গীকারাবদ্ধ। ১৯৫৬ সালের ১৬ই অক্টোবর যে শিশুটি বরিশালের রেডক্রশ হাসপাতালে জন্মগ্রহণ করেন, বাংলা ভাষার কাব্যজগতে নতুন মাত্রা ও ধ্বনিময়তা যোগ করে ১৯৯১ সালের ২১ জুন ভোরবেলা মাত্র পঁয়ত্রিশ বৎসর বয়সে তিনি লোকান্তরিত হন।
‘জাতির পতাকা খামচে ধরেছে সেই পুরনো শকুন', ‘ বাতাসে লাশের গন্ধ' প্রভৃতি পাঠকপ্রিয় বহুল উচ্চারিত পংক্তিমালার রচয়িতা ছিলেন তিনি। দেশ ও জাতিকে মুক্তিযুদ্ধের আলোকে নতুন আকাঙ্ক্ষায় জাগিয়ে তোলার দায়িত্ব একাই নিজের কাঁধে তুলে নিয়েছিলেন। তাই তাঁর কাব্যে পাই দ্রোহের নতুন সুর; নতুন মানবিক বোধ ও সমাজ কাঠামোর জয়ধ্বনি।
আরও পড়ুন
0 মন্তব্যসমূহ