পৃষ্ঠা নম্বরের ক্রমিক অনুযায়ী সুচীপত্রটি সাজানো হয়নি। ফলে বিষয় ভিত্তিক থাকার প্রয়োজনে পিছনের লেখা সামনে আবার বইয়ের আগের দিকে ছাপানো লেখার নাম সূচীপত্রের নিচে চলে এসেছে। যেমন 'ছোটদের রোবোটিক কল্পকাহিনি' লেখাটি ছাপা হয়েছে ০৩ পৃষ্ঠায়, কিন্তু সূচীতে নামটি এসেছে ২০টি শিরোনামেরও পরে। এটা ধর্তব্য নয়। বিষয় বৈচিত্র্য সৃষ্টির জন্যই হয়তো এভাবে সাজানো হয়েছে। আমাকে সূচীপত্রের একেবারে শেষ থাকা একটি বিষয় মুগ্ধ করেছে। শিশুরা মনের আনন্দে ছবি আঁকে। সেই ছবি যখন প্রশংসিত হয়, তখন তাদের আনন্দ বেড়ে যায় কয়েকগুণ। নবারুণ কর্তৃপক্ষ কোমলমতি শিশুদের আঁকা ছবি প্রকাশ করে তাদেরকে আনন্দে আপ্লুত করতে কার্পণ্য করেন নি।
নবারুণ পত্রিকায় বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী 'টিউনিয়ান ষড়যন্ত্র'

নবারুণ পত্রিকার মূল অংশ শুরু হয়েছে ক্ষুদে লেখক আব্দুল্লাহ-আল-মারুফের লেখা বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী 'টিউনিয়ান ষড়যন্ত্র' দিয়ে। এই গল্পটির জন্য একটি আকর্ষণীয় ছবি এঁকে দিয়েছেন বিখ্যাত শিল্পী ধ্রুব এষ।

টিউনিয়া নামের একটি গ্রহের অধিবাসী টিউনিয়ানদের নিয়ে কাহিনী। ক্ষুদে লেখককে খেলার মাঠে টিউনিয়ানরা কাঁচের গোলকে করে কীভাবে বন্দী করে, আর কীভাবেই বা সে উদ্ধার পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসে তাই এই মজার গল্পটির উপজীব্য। ছোট্ট একটু কাহিনীটিকে এত আকর্ষণীয় ও রোমাঞ্চকর করে লেখা হয়েছে যে লেখকের প্রশংসা করতেই হয়।
আহসান হাবীব এর লেখা রোবোটিক কমিকস ডাইরোবট
আহসান হাবীব এর লেখা রোবোটিক কমিকস ডাইরোবট (আংশিক)

রোবটকে নিয়ে লেখা অন্য গল্পগুলোও কম মজার নয়। কোন গল্পে 'ইসকুট' নামে রোবটের সাথে ছোট্ট মেয়ে অরণীর গল্পের কথা আছে; কোনটাতে বিদ্রোহী, দুমুখো, ক্লান্ত রোবট, বন্ধু রোবট, গৃহকাজে নিপুণ রোবট নানাধরণের রোবটের হাস্যকর কথাবার্তার কাহিনী আছে।


রোবোটিক কবিতাগুলোও কম আকর্ষণীয় নয়। যেমন রোকসানা গুলশান তার 'রোবট' কবিতায় লিখেছেন-

    মেশিন মানুষ আমি যে এক
    নামটি রোবট,
    দেখে শুনে পা ফেলি তাই
    খাই না তো হোঁচট।

আরেকটি মজার রোবোটিক কবিতা লিখেছেন সাঈদ তপু। তার কবিতার নামও 'রোবট'। তিনি লিখেছেন-

    চলতে পারে, খেলতে পারে
    সকল কাজই করতে পারে
    মানবরূপী যন্ত্র।
    সৃষ্টিশীল এই বিশ্বে রোবট
    বর্তমানে বিজ্ঞানের এক
    বিস্ময়কর মন্ত্র।


নবারুণ পত্রিকার এই সংখ্যায় যে 'রোবোটিক নিবন্ধ'গুলি আছে তার সবগুলোই বেশ তথ্যবহুল। নাদিরা মজুমদারের 'কারেল চাপেকের রোবট' নিবন্ধে রয়েছে রোবট শব্দ ব্যবহারের প্রথম দিকের কাহিনী। চেক প্রজাতন্ত্রের ত্রুতনভ শহরে ১৮৯০ সালে জন্ম নেন 'কারেল চ্যাপেক'। তিনি ১৯২০ সালে একটি বৈজ্ঞানিক কল্পকাহিনী ভিত্তিক নাটক লিখেন। এই নাটকের নাম ছিল 'রসুমভি উনিভাজালনী রবোতি'। এর ইংরেজি হল "রোসামস ইউনিভার্সাল রোবটু" অর্থাৎ বাংলায় 'রসুমের সর্বজনীন রোবটরা'। এই নাটকটি এতটাই জনপ্রিয় হয় যে ১৯২৩ সালের মধ্যেই ত্রিশটি ভাষায় অনুদিত হয়। লেখক নাদিরা মজুমদার তার রচনায় কারেল চ্যাপেকের কথা বলতে গিয়ে লেখক 'সিক্স মিলিয়ন ডলার ম্যান', ‘বায়োনিক ওম্যান' প্রভৃতি যন্ত্রসংযুক্ত শক্তিশালী মানুষের কাহিনীর প্রসঙ্গও টেনে এনেছেন।

বিস্তারিত