জার্মানীর জর্নাল
 বাঙ্গালা শব্দকোষ
বিংশ শতকের সূচনাংশে আধুনিক বাংলা ভাষায় লিখিত মানসম্পন্ন অভিধানের সংখ্যা কম ছিল। বস্তুত সেই সময়টাই ছিল ভাষা গঠনের, শিল্প-সংস্কৃতি-বোধ নির্মাণের। ইউরোপীয় নবজাগরণের প্রভাবে ভারতবর্ষেও নবআলোকের উত্তাপ অনুভূত হচ্ছিল। আর এর প্রতিক্রিয়া স্পষ্টরূপে প্রত্যক্ষ হয়েছিল বাংলাভাষী অঞ্চলে। ফলে নিত্য নতুন সাংস্কৃতিক-সামাজিক পরিবর্তনের পাশাপাশি ভাষা ও সাহিত্যেও লেগেছিল বিনির্মাণের উৎসাহ। এই প্রতিক্রিয়ায় ভাষা-সংস্কৃতিপ্রেমী মানুষেরা নিজেদের প্রতিভার সর্বোচ্চ প্রকাশ ঘটাতে সচেষ্ট ছিলেন।

রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদী মনে করতেন
'অপুর্ব্ববস্তুনির্মাণক্ষমাপ্রজ্ঞা' হল প্রতিভা আর বিচিত্র বিষয় বিচারের দক্ষতা হল 'পাণ্ডিত্য'।
 রামেন্দ্রসুন্দর ত্রিবেদীর সংজ্ঞাকে মান্য করে বলা যায় আচার্য যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি (১৮৫৯-১৯৫৬) ছিলেন পণ্ডিতদের মধ্যে অন্যতম। প্রকৃতি ও মানবরচিত ইতিহাসের বিভিন্ন বিষয় সম্পর্কে তিনি সুবিস্তৃত ও সুগভীর জ্ঞানের অধিকারী ছিলেন।
Doing the best at this moment puts you in the best place for the next moment!Oprah Winfrey

যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি সংকলিত বাঙ্গালা শব্দকোষ অভিধানটি সেকালে কতটা জনপ্রিয় হয়েছিল বা লেখক-সাহিত্যিক-পণ্ডিত ও সাধারণ মানুষের কাছে কতটা গ্রহণীয় হয়েছিল সে বিষয়ক কোন বিবৃতি এখন আর সহজলভ্য নয়। তবে এই অভিধানটি বাংলা ভাষা ও বাংলা শব্দভাণ্ডার বিনির্মাণে অবদান যে রেখেছিল তা অনস্বীকার্য।

সেকালে প্রচলিত কিন্তু বর্তমানে অপ্রচলিত এমন শব্দের অর্থ জানতে যোগেশচন্দ্র রায় বিদ্যানিধি সংকলিত বাঙ্গালা শব্দকোষ বইটি কৌতুহলী পাঠকের তৃষ্ণা মেটাবে। প্রত্যেকটা শব্দের পাশে শব্দের মূল উৎস উল্লেখ করা আছে। সংস্কৃত, ইংরেজি, আরবি, ফারসি, ওড়িয়া, হিন্দি ভাষা থেকে কোন শব্দ বাংলায় আত্মস্থ হয়েছে তা সহজে বোঝা যায়। শব্দার্থ লিখতে গিয়ে কখনও কখনও একাধিক সমার্থকশব্দ ও বিস্তৃত বিবরণ দেয়া হয়েছে; বিভিন্ন শব্দের পাশে কবিতা-ছড়ার লাইন উল্লেখ করা হয়েছে। প্রযোজ্য ক্ষেত্রে ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করে পাঠকের আগ্রহকে তৃপ্ত করার বিশেষ চেষ্টাও লক্ষ্যনীয়।

বিস্তারিত পড়ুন