এতে প্রাক-সক্রেটিস যুগের গ্রিক দর্শনের স্বরূপ তুলে ধরার চেষ্টা করা হয়েছে। প্লেটো আর অ্যারিস্টটলের হাতে পাশ্চাত্য দর্শনের যে ভাণ্ডার গড়ে উঠেছে, দুই-আড়াই হাজার বছর ধরে সেই ভাণ্ডারে যা-কিছু জমা পড়েছে, তার সমস্ত কিছুর বীজ রোপণ করে গেছেন প্রাক-সক্রেটিস যুগের গ্রিক চিন্তাবিদগণ। তাঁদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য থেলিস, অ্যানাক্সিমেন্ডার, অ্যানোস্কিমেনিস, পিথাগোরাস, হেরাক্লিটাস, পারমিনাইডিস, এম্পিডক্লিস, অ্যানাকেক্সগোরাস, লুসিপ্পাস, ডেমোক্রিটাস, জেনোফেনিস, প্রোটাগোরাস প্রমুখ। হোয়াইটহেড বলেছিলেন, পাশ্চাত্য দর্শনের সমগ্র ইতিহাস প্লেটোর দর্শনের পাদটীকা ছাড়া কিছু নয়। প্রাক-সক্রেটিস যুগের চিন্তাবিদদের খোঁজখবর নেওয়ার পর দেখা যাবে, প্লেটোর দর্শন গড়ে উঠেছে তাঁদের চিন্তাভাবনা থেকেই। প্লেটোর ওপর পিথাগোরাস, পারমিনাইডিস ও হেরাক্লিটাসের প্রভাব ছিল অত্যন্ত গভীর। পিতাগোরাসের কাছ থেকে তিনি পেয়েছেন ধর্মীয় প্রবণতা, অমরত্বে বিম্বাস, পরজাগতিকতা, পুরোহিতের মেজাজ।.... যাই হোক, সরলভাবে বললে, প্রাক-সক্রেটিস যুগের দার্শনিকগণ যেসব প্রসঙ্গ উত্থাপন করে গেছেন সমগ্র পাশ্চাত্য দর্শনে দুই হাজার বছর ধরে তারই আলোচনা, সমালোচনা,পর্যালোচনা চলছে। আমাদের কৌতুহলের সমস্ত বিষয়ই তাঁরা স্পর্শ করে গেছেন।.... যেমন, পারমিনাইডিসবলেছেন,

 'যে জিনিস সম্পর্কে চিন্তা করা যায় এবং যে-জিনিসের কারণে চিন্তার অস্তিত্ব আছে তা একই। কারণ অস্তিত্বমান কোনো বস্তু ছাড়া তা সম্পর্কে উচ্চারিত কোনো চিন্তা হতে পারে না।'

 বার্ট্রান্ড রাসেল এই যুক্তির সারকথা ব্যাখ্যা করেছেন এভাবে:
  • যখন তুমি কিছু সম্পর্কে চিন্তা কর, অবশ্যই কোনো-একটা বস্তু সম্পর্কে চিন্তা কর; 
  • যখন তুমি একটা নাম ব্যবহার কর অবশ্যই তা একটা-কিছুর নাম। 
  • সুতরাং চিন্তা ও ভাষা উভয়েরই এমন বিষয় প্রয়োজন যা তাকে চিন্তা ও ভাষার বাইরে। 
আর, একটা বস্তু সম্পর্কে যে কোনো সময় চিন্তা করা বা কথা বলা যায় মানে, যে-বস্তু সম্পর্কে চিন্তা করা বা কথা বলা যায় তার অস্তিত্ব সর্বদা বিরাজমান থাকে।

বিস্তারিত এখানে